Header Ads Widget

মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি | Muktagacha Jamindar Bari


মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ির ইতিহাস

মুক্তাগাছা জমিদার বা মুক্তাগাছা রাজবাড়ি বা মুক্তাগাছা জমিদার খাতের ইতিহাস অত্যন্ত স্থানীয় এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তাগাছা বাংলাদেশের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার একটি স্থান। এটি কলিকাতা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

মুক্তাগাছা জমিদার খাতের ইতিহাসে প্রায় ১৬শ শতাব্দীতে প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। এটি প্রাচীনতম শতকে বড়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর রাজধানী ছিল মুক্তাবাদ। মুক্তাগাছা জমিদার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যরা সেখানে একটি প্রভাবশালী জমিদার পরিবার হিসাবে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। এই পরিবারের অনেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ছিলেন।

মুক্তাগাছা জমিদার পরিবার বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছে। এই পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাদের অবদানের মধ্যে অন্যতম আছে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, দানশিল্প, শিল্প প্রতিযোগিতা, সাহিত্য, ও সংস্কৃতির উন্নতি।

মুক্তাগাছায় জমিদারগণ অবস্থানকালে বহু স্থাপনা সৃষ্টি করেন। রোপন করেন বিরল প্রজাতির গাছ পালা। জমিদারগণ আজ নেই রেখে গেছেন তাদের স্মৃতি মূল্যবান বহু স্থাপনা। আজ যা পর্যটন সমৃদ্ধ। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কের মুক্তাগাছার রসুলপুর বনে বিশাল বিশাল শাল গজারি গাছ আর লাল মাটিতে আনারস বাগান দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। দেশীয় এসমস্ত গাছের ফাঁকে সূর্যের আলো অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। জমিদারদের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে এই বনে গড়ে তোলা হয় বিদ্রোহী ফকির সণ্যাসী বাহিনীর কার্যক্রম। খাজুলিয়া এলাকায় বিবির ঘর নামের বাড়ি বানিয়ে তাদের দাবী আদায়ে অনেক জমিদারকে অপহরণ করে রাখে বিদ্রোহীরা। ঐতিহাসিক বিবির ঘর আজ পর্যটন কেন্দ্র। 


মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি কিভাবে যাবেন?

মুক্তাগাছা জমিদার বা রাজবাড়ি পর্যটনে যাওয়ার জন্য অনেকগুলো পথ রয়েছে, যেমন:

  1. বাস সার্ভিস: ঢাকা থেকে মুক্তাগাছা জমিদার বা রাজবাড়ি যেতে পারেন বাস সার্ভিস ব্যবহার করে। ধানমন্ডি, ফকিরাপুল, গাবতলী অথবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল হতে ঢাকা-মুক্তাগাছা মুলতবি বাস পাওয়া যায়।

  2. রেল সার্ভিস: মুক্তাগাছা জমিদার রাজবাড়ি যাওয়ার জন্য রেল সার্ভিস ব্যবহার করা যেতে পারে। ঢাকা থেকে সাহায্যগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ট্রেনে উঠে নেওয়ার পর, সাহায্যগঞ্জ থেকে মুক্তাগাছা জমিদার বা রাজবাড়ি যেতে আপনি গাড়ী বা রিক্সা ব্যবহার করতে পারেন।

  3. গাড়ী সার্ভিস: যদি আপনি নিজেই গাড়ি চালান তাহলে আপনি ঢাকা থেকে মুক্তাগাছা জমিদার বা রাজবাড়ি যেতে পারেন ঢাকা-কাঞ্চনকা মহাসড়ক অনুযায়ী। এই রাস্তায় চলে যেতে হবে গাবতলী, পতেঙ্গা, নাটোর পর্যন্ত এবং তারপরে মুক্তাগাছা জমিদার রাজবাড়ি পৌঁছাতে পারেন।

এই সব পথের মাধ্যমে আপনি মুক্তাগাছা জমিদার বা রাজবাড়ি পর্যটন করতে পারেন। আপনি এই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থানে দীর্ঘ সময় কাটাতে পারেন এবং এর ঐতিহাসিক সৌন্দর্যে আনন্দ পাবেন।


মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি কোথায় থাকবেন?

মুক্তাগাছায় বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিতে থাকতে পারেন। কিংবা ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল থেকে আপনার জন্য ভাল হোটেল বেছে নিতে পারেন। তাছাড়া ভরসা করতে পারেন ময়মনসিংহের আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুস্তাফিজ অথবা সিলভার ক্যাসেল এর উপর।


মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি কোথায় খাবেন?


এছাড়া ভারি খাবার খেতে চাইলে মুক্তাগাছা বাজারেই মোটামুটি মানের হোটেল আছে, খেয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া ময়মনসিংহ শহরে খেতে চাইলে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাওয়ের স্বাধ চেখে দেখতে পারেন। এছাড়া ভাল মানের খাবারের জন্য হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দার বেশ সুনাম রয়েছে।
মুক্তাগাছার বিখ্যাত মন্ডা খেতে ভুলে গেলে আপনার এই আনন্দময় ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে তাই মন্ডা খেতে অবশ্যই ভুলে যাবেন না। দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোঁপাল পালের মন্ডার দোকান রাজবাড়ী এর সামনেই। এই মন্ডা সুনাম সারা দেশের মানুষের কাছেই অতি সুপরিচিত।